ব্যবসা করতে আবার টাকা লাগে নাকি? কথাটা প্রায়ই বলে থাকেন আর্নেষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মামুনুর রশিদ। তিন বন্ধু মিলে ব্যাবসার যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০১০ সালে। স্বপ্নের বীজ বুনন হয়েছিল ছাত্রবস্থায়। লক্ষ্য ছিল ব্যবসা করবই। পাশ করার পর সবাই কিছু দিন চাকুরীরত ছিলেন এবং সব বাদ দিয়ে তিন বন্ধু মিলে এক তালে ব্যবসায় নেমে পরলেন।
ভাল চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা শুরু করার এই উদ্যোগ প্রথম দিকে কারও পরিবার মেনে নেয় নি। এক প্রকার পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং আজ বাংলাদেশের কয়েকটি সফল কোম্পানীর তালিকায় নিজেদের কোম্পানীর নাম অন্তর্ভুক্ত করান।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হওয়ায় তিন জনেরই ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে ব্যাবসা করার। শুন্য হাতে ব্যাবসা করতে নেমে আজ এত বড় সফল ব্যাবসায়ী হওয়ার পিছনের রহস্য জানতে চাইলে তিন জনই এক বাক্যে বলেন যে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে ধৈর্য ধরে লেগে ছিলেন বিঁধায় এই সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।
শুরুর দিকে হয়তো কোন নির্দিষ্ট পণ্য দিয়ে ব্যাবসা শুরু করার পরিকল্পনা ছিল না, কিন্তু সময়ের সাথে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী তারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পণ্য দিয়ে কাজ শুরু করলেন তার মধ্যে অন্যতম হল চিলার মেশিন।
চিলার মেশিনের কাজ কি এই প্রশ্নের উত্তরে আর্নেষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর মোঃ আকতারুজ্জামান সোহাগ জানান, চিলার হল এমন একটা মেশিন যা পানি ঠাণ্ডা করার কাজে বিভিন্ন গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি, প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি, ফারমাসিটিকেল ইন্ডাস্ট্রি ও অন্যান্য শিতলিকরন প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি মৌলিক মেশিন।
বাংলাদেশে আগে সব দেশের বাহিরে থেকে এই চিলার মেশিন আমদানি করা হত কিন্তু এই আর্নেষ্ট ইঞ্জিনিয়ারই বাংলাদেশে প্রথম চিলার মেশিন বানানো শুরু করেন।
নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় এই চিলার মেশিন মেনুফেচারিং। সেই থেকে এখন অবধি চলছে চিলার ও অন্যান্য কুলিং সরঞ্জামাদির মেনুফেচারিংয়ের কাজ।
শুরুর দিকে এই যাত্রা খুব বেশি সহজতর ছিল না। অনেক কাঠ কয়লা পুড়িয়ে , অনেক উচু নিচু পথ পাড়ি দিয়ে তারা আজকের এই সফল অবস্থানে এসেছে।
বাংলাদেশের প্রায় বড় বড় শ খানেক কোম্পানী এই আর্নেষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাস্টমার। দেশের চাহিদা পূরণ করে দেশের বাহিরে চিলার রপ্তানির কাজ চলছে এবং এই চিলারকে কিভাবে বিশ্ব মানের করা যায় সেই নিয়ে গবেষণাও চলছে বলে জানান, আর্নেষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মার্কেটিং ডিরেক্টর পার্থ পোদ্দার।
সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালে বাংলাদেশে তৈরি এই চিলার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হবে বলে বদ্ধ পরিকর এই তিন বন্ধু।
সময়ের বাংলা/ এসএ